আর কতকাল অসহায় পিতা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরবে
টিপু সুলতান, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহের শৈলকুপা শাহী মসজিদ পাড়ার পাঁচ সন্তানের জনক ছরোয়ার হোসেন(৭৫) সম্প্রতি মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হবার সময় পায়ে আঘাত পান। স্হানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। সংসারে ছরোয়ার হোসেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। যিনি কিনা পেশায় একজন তেল ব্যবসায়ী।
তার পাঁচ সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে সংসার।সবাইকে তিনি বিবাহ দিয়েছেন। ছেলে দুটি বিবাহ করে পৃথক হয়ে সংসার করছেন। এদিকে বৃদ্ধ পিতামাতা কিভাবে সংসার চালাচ্ছেন,খেয়ে আছেন কি না তাতে কোন খোঁজখবর রাখেন না দুটি ছেলে সন্তান।
সবাই যখন ঈদ আনন্দে ব্যস্ত, তখন বৃদ্ধ ছরোয়ার হোসেন মানুষের দ্বারে দ্বারে অসুস্থ শরীর নিয়ে সাহায্য প্রার্থনায় ঘুরছে বাজারের এ দোকান থেকে ও দোকানে। একদিকে ছরোয়ার হোসেন বয়সের ভাড়ে নুয়ে পড়েছেন অন্যদিকে তার পায়ে বাসা বেধেছে ভাইরাসজনিত পচনব্যাধি গ্যাং গ্যারেজ নামক রোগ। প্রতিদিন তার ঔষধ সেবনের জন্য দুইশত টাকা করে লাগে।
কিন্তু অর্থ সম্পদ না থাকায় মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে ঔষধ খরচ ও সংসারের ব্যয়ভার মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বৃদ্ধ ছরোয়ার হোসেন পচনব্যাধি গ্যাং গ্যারেজ রোগ নিরাময়ের জন্য ইতিমধ্যে অনেক চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হয়েছেন। ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন তার পা কেটে ফেলার জন্য। তবে সেখানেও অপারেশন করার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন।
যেখানে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেখানে অপারেশনের জন্য এতো অর্থ কোথা হতে আসবে সেটা ভেবেই কুল কিনারা খুজে পাচ্ছেন না বৃদ্ধ ছরোয়ার হোসেন। বৃদ্ধ ছরোয়ার হোসেন প্রতিবেদকের কাছে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার কি ভাগ্য, আমি কি পাপ করেছি, উপযুক্ত দুটি ছেলে সন্তান থাকা সত্বেও মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ঔষধ ও সংসার চালানোর জন্য অর্থ আদায় করছি।
আমি আমার পাঁচ সন্তানকে অনেক কষ্ট করে, খেয়ে না খেয়ে মানুষ করেছি। কিন্তু শেষ বয়সে এসে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তা আমি নিজেও ভাবিনি। তাই উপজেলার মানবিক হৃদয়ের অধিকারীদের নিকট সুদৃষ্টি কামনা করছি।