মামুন হুসাইনের শৈশব-কৈশোর কেটেছে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলায়
#ঝিনাইদহের চোখঃ
শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি প্রবর্তিত ‘রনজিত পুরস্কার ২০১৯’ (পূর্বে ‘শ্রুতি পুরস্কার’) ঘোষণা করা হয়েছে। এবার এ পুরস্কার পাচ্ছেন কথাসাহিত্যিক মামুন হুসাইন।
শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। শ্রুতির পরিচালক ধীমান সাহা জুয়েল সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এর আগে শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির কার্যকরী কমিটি এবারের পুরস্কারের জন্য মামুন হুসাইনের নাম নির্বাচন করে। নিজস্ব সৃজন শৈলীতে বাঙলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াসে সক্রিয় থাকার জন্য তাকে এ পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় শ্রুতি।
আগামী ২ আগস্ট (শুক্রবার) আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানের ২৭ বছর পূর্তি ও রনজিত পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে লেখকের হাতে এ পুরস্কার হিসেবে নগদ ২৫ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শ্রুতি সাং¯ৃ‹তিক একাডেমির সভাপতি আবদুর রহমান, নীতি নির্ধারণী সদস্য কবি কাজল কানন, পাঠাগার ও পাঠচক্র বিভাগের উপ-পরিচালক অচিন পাঠ্য, পরিবেশ উন্নয়ন বিভাগের উপ-পরিচালক রাসেল আদিত্য, কার্যকরী সদস্য- শারেফ আহম্মেদ, অভি জাহিদ, আপার আরন্য, চারণ শিকড়সহ সংগঠনের সদস্য এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা।
কথাসাহিত্যিক মামুন হুসাইন ১৯৬২ সালের ৪ মার্চ কুষ্টিয়া জেলা শহরের কমলাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আলতাফ হুসাইন, মা- হোসনে আরা বেগম। মামুন হুসাইনের শৈশব-কৈশোর কেেেছ কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলায়। তিনি পড়েছেন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে। ১৯৭৭ সালে এসএসসি এবং ১৯৭৯ সালে এইচএসসি পাস করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এমবিবিএস করেন ১৯৮৫ সালে। এরপর সরকারি কর্মকমিশনের অধীনে চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।
পরে মামুন হুসাইন মেডিকেল সোসিওলজি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করেন। ২০০২ সালে এমফিল এবং ২০০৯ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি ২০১১ সালে সাইকিয়াট্রিতে এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। মামুন হুসাইন বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
মামুন হুসাইনের সাহিত্যে সক্রিয়তা আশির দশকে হলেও প্রাথমিক অবস্থায় তিনি সাহিত্যের ছোটকাগজগুলোতেই লিখতেন। বেশ পরে তিনি ১৯৯৫ সালে প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘শান্ত সন্ত্রাসের চাঁদমারি’ প্রকাশ করেন। গ্রন্থটি প্রকাশের আগেই তিনি বাংলাদেশের গল্পধারায় ভিন্নধর্মী গল্পকার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ মিলিয় মামুন হুসাইনের গ্রন্থ ১৯টি।
প্রসঙ্গত, শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি প্রথমে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের নামে তার অনুমতি নিয়ে একটি পুরস্কার প্রবর্তন করে। শিল্পী তার জীবদ্দশায়ই পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম নির্বাচন করেন। তার নির্বাচনে প্রথম পুরস্কার পান কবি শামসুর রাহমান।
এরপর শিল্পী এসএম সুলতানের মৃত্যুর পর শ্রুতি পুরস্কারের সার্বিক কর্তৃত্ব চলে আসে শ্রুতির হাতে। তখন উদ্দেশ্য ও মান ঠিক রেখে পুরস্কারটি নাম পরিবর্তন করে ‘শ্রুতি পুরস্কার’ করা হয়। এরপর ১টি ‘সূর্যশিল্পী সুলতান পুরস্কার’ ও ১২টি শ্রতি পুরস্কার হিসেবে মোট ১৩টি পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এ বছরের ২ জানুয়ারি শ্রুতির প্রতিষ্ঠাতা রনজিত কুমার পরলোক গমন করলে প্রতিষ্ঠানের প্রতি তার দায় ও সামগ্রিক কর্ম বিবেচনায় বর্তমান কমিটি শ্রুতি পুরস্কারটি ‘রনজিত পুরস্কার’ নামকরণের সিদ্ধান্ত নেয়।