সেকাল- একাল—শ্রী তপন কুমার রায়
#ঝিনাইদহের চোখঃ
দিনের শুরু টা ভালো ছিলো না।
কেমন একটা উদাসীনতার ছায়া পরছিলো মনে, বিষন্নতার এক খেয়ালে কোথায় যেনো পড়েছিলাম আমি।
মেঠো পথের পাশ দিয়ে রেল লাইনটা দূরে ঝাপসা হয়ে গেছে, তাল গাছের পাতায় ঝুলছে বাবুইয়ের পরিত্যাক্ত বাসা গুলো, অনেকটা আমারই মতো।
রায়দের পিয়ারা তলে পাকা পেয়ারা গুলো পরে আছে, মন মাতানো বেশ একটা সৌরব ছড়িয়েছে বাতাসে।
সাপের মত একেবেকে চলেছে বুড়ো নদীটা,আহারে কী অপূর্ব!
যৌবন ছিলো নদীটার।
দু কূলে বর্ষার জল ছলছল করে বেরাতো, দেশী মাছের একটা খনি ছিলো যেনো…
কালের কোন কালো স্রোতে কোথায় যেন বয়ে গেছে সেইসব।
এখন আর চৈত্র লাগেনা,পৌষেই শুখিয়ে যায় নদীটা।
রেল ষ্টেশনের বাজার টা অনেক বড় হয়ে গেছে, নাপিতেরা এখন আর ইটের উপর বসিয়ে চুল দারী কাটায় না পরিপাটি দোকানে গদির চেয়ারে মেহমানের মত খাতির করে।
শীতের সকালে সেই খেজুরের রস- গুড়ের স্বাদটাও আর পাওয়া যায়না এখন, আমার ছোট বেলার কথা মনে আছে এখোনো, শীতের কূয়াসা ভাঙ্গা রোদে বসে পিঠা খাওয়ার মজাই ছিলো অন্য রকম।
নতুন গমের রুটির গন্ধে ভরে যেতো পাড়াময় বাতাস।
নতুন কলাই ডাউল আর মসুর একই রকম প্রকাশ করতো নিজেদের।কি ভালো ছিলো সেই দিন গুলো।
এখন সম্পর্কে মানুষ স্বার্থ খোজে।
ভালোবাসার মাঝে প্রতারণা, বিশ্বাসে দেয় ধোকা।
বাতাসে মিশে গেছে তারই বিষ।
হাজারো রোগে আক্রান্ত মানুষ এবং সমাজ।
জানি ফেলে আসা দিন গুলো আর ফিরবেনা।
ফিরবেনা মানুষের সুখ আর শান্তি……