টপ লিডমহেশপুর

বিএডিসির গুদামে প্রায় ২কোটি টাকার অতিরিক্ত ধান বীজ নিয়ে তোলপাড়

#ঝিনাইদহের চোখঃ

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর যশোরস্থ শেখহাটী বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আনুমানিক দুই কোটি টাকা মুল্যের অতিরিক্ত বীজ মজুদ নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়েছে। এই বীজ কোথা থেকে আসলো তা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত এই বীজের উৎস খুজতে মাঠে নেমেছে বিএডিসি’র কর্মকর্তারা।

বিএডিসির যশোর কেন্দ্রের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল কাদের এক চিঠির মাধ্যমে অতিরিক্ত এই বীজের মজুদের কথা বিএডিসি’র উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। বিএডিসি’র সদস্য পরিচালককে বিষয়টি অবহিত করে জানানো হয় যশোরের শেখহাটি বীজ গুদামে এই অতিরিক্ত বীজ বিধি বহির্ভূত ভাবে সংরক্ষন করা হচ্ছে। যার পরিমাণ প্রায় ১৩০ মেট্রিক টন এবং বর্তমান বাজার মুল্য দুই কোটি টাকার উপরে বলে তিনি জানান।

কর্মকর্তাদের একটি সুত্রে জানাগেছে, ২০১৮-১৯ উৎপাদন বর্ষে দত্তনগর খামারের আওতাধীন গোকুলনগর বীজ উৎপাদন খামার থেকে উৎপাদিত ১১৭.২৬০ মেঃ টন ও পাথিলা বীজ উৎপাদন খামার থেকে উৎপাদিত ৬৯.৫০০ মেঃ টন, মোট ১৮৬.৭৬০ মেঃ টন এসএল-৮ এইচ জাতের হাইব্রীড বীজ যশোর বীজ পক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে যাচাইয়ের মাধ্যমে আরো অতিরিক্ত ১২৯.২২০ মেঃ টন বীজ পাওয়া গেছে।

এদিকে উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল কাদের চিঠি পেয়ে নড়েচড়ে বসেন বিএডিসির কর্মকর্তারা। বিএডিসির জিএম (বীজ) নরুন নবী সরদার ও অতিরিক্ত মহাব্যাবস্থাপক (খামার) তপন কুমার আইচ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামার পরিদর্শন করে তথ্য নিতে থাকেন। পরিদর্শনকালে তারা এই বীজ দত্তনগরের দুইটি খামার থেকে বিধি বহির্ভুতভাবে পাঠানোর বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন।

খামারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন, পাথিলা ও গোকুলনগর বীজ উৎপাদন খামার থেকে অতিরিক্ত প্রায় ১৩০ মেঃ টন এসএল-৮ এইচ জাতের হাইব্রীড ধানের বীজ অসৎ উদ্দেশ্যে শেখহাটী বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে মজুদ করা হয়েছে। এগুলোর সরকারি হিসাব না থাকায় বিক্রিত অর্থ আত্বসাত করার পরিকল্পনা ছিল। ওই সুত্রটি আরো জানান, খামারে বীজ উৎপাদনের সময় লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয় কম। এর চেয়ে বেশি উৎপাদন হলে তা এভাবেই সরকারের ঘরের বাইরে চলে যায়। এবার বিষয়টি জানাজানি হলে বিএডিসি কর্মকর্তাদের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

বিএডিসির জিএম (সীড) নরুন নবী সরদার ও ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাব্যাবস্থাপক (খামার) তপন কুমার আইচ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঝিনাইদহের দত্তনগর কৃষি খামারে অবস্থান করছেন বলে জানাগেছে। বিষয়টি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাব্যাবস্থাপক (খামার) তপন কুমার আইচ গত ২২ আগষ্ট একটি চিঠির মাধ্যমে ঝিনাইদহের দত্তনগর খামার ব্যবস্থাপকদের অতিরিক্ত বীজের মজুদের বিষয়টি জানাতে বলেছেন। এ বিষয়ে ওই দুই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বরার চেষ্টা করলেও তারা মোবাইল ধরেননি।

এ বিষয়ে পাথিলা খামারের ব্যবস্থাপক মোঃ আক্তারুজ্জামান এর সঙ্গে কথা বললে তিনি গকুলনগর খামারের ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। আর গকুলনগর খামারের ব্যবস্থাপক তপন কুমার জানান, সব বীজই বিএডিসি’র। তাছাড়া সব সমাধান হয়ে গেছে। আপাতত কোনো সমস্যা নেই বলে দাবি করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button