টপ লিডমহেশপুর

মহেশপুর পল্লীতে ৩ ভাইয়ের ব্যাট তৈরির কারখানা

ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পল্লীতে গড়ে তোলা হয়েছে হাতে তৈরি ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কারখানা।

আপন তিন ভাই ৩টি কারখানা থেকে প্রতিদিন ২ থেকে আড়াই শতাধিক ছোট-বড় ব্যাট তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন।

আর এই ব্যাট দিয়ে খেলা প্র্যাকটিস করে অনেকে হয়েছেন বড় মাপের ক্রিকেটার। গত ২১ বছর ধরে তারা এই ব্যাট তৈরির কাজ করছেন। কর্মসংস্থান করেছেন ৩০ জনের। উপজেলার বাথানগাছি গ্রামের রাজেন্দ্রনাথ, সাধন দাস ও শ্যামল দাস গড়ে তুলেছেন এই ব্যাট কারখানা।

সরজমিন বাথানগাছি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একটি বাড়িতে পাশাপাশি তিনটি ছোট কারখানা। কোথাও পড়ে আছে কাঠ, কোথাও ছোট ছোট কাটিং মেশিন, ৩০ জন কর্মচারীর কেউ বা ব্যাটের কাঠ পরিষ্কার করছেন। কেউ বা ব্যাটে কাভার পরাচ্ছেন। এই তিনটি কারখানা বলা হলেও সবকিছু করা হচ্ছে হাতেই।
কথা হয় একটি কারখানার মালিক রাজেন্দ্রনাথের সঙ্গে।

তিনি জানান, গত ২১ বছর ধরে তারা তিন ভাই তিনটি কারখানা পরিচালনা করছেন। প্রতিদিন এই কারখানা থেকে ১৫০ থেকে ২০০ টি বিভিন্ন ধরণের ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করা হচ্ছে। তাদের কর্মচারী আছেন ৩০ জন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রিকেট ব্যাট বিক্রেতারা তাদের অগ্রিম ব্যাট অর্ডার দেন। প্রকার ভেদে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি দরে তারা ব্যাট তৈরি করেন। একটি ব্যাটে গড়ে ৪০-৫০ টাকা লাভ থাকে বলে তিনি জানান।

রাজেন্দ্রনাথ আরো জানান, তারা মূলত ঝিনাইদহ আরাপপুর থেকে ব্যাট তৈরি প্রধান উপাদান কাঠ সংগ্রহ করে থাকেন। এরপর কাঠগুলো বাড়িতে এনে ভালো করে শুকিয়ে নেন। তারপর এগুলো ছোট কাটার মেশিন, পরিষ্কার করার মেশিনে কাজ করে আঠা দিয়ে ব্যাট গুলো সেট করা হয়। এরপর এগুলো ভালোভাবে শুকানোর পর তার পর স্টিকার লাগিয়ে বাজারজাত করা হয়। তিনি আরো বলেন, হাতে এই ব্যাট তৈরি করে তিনি আজ পাকা বাড়ি তৈরি করেছেন, ৩ বিঘা জমি ও মোটরসাইকেল কিনেছেন।

ক্রিকেট ব্যাট তৈরি কারখানায় কর্মরত কর্মচারীরা জানান, তারা অনেক দিন ধরে এই ব্যাট তৈরির সঙ্গে জড়িত। প্রতিদিন ৩০০ টাকা হাজিরায় কাজ করেন। এখানে প্রতিদিন ছোট-বড় সাইজের ব্যাট তৈরি করা হয়। যারা ক্রিকেট খেলা করেন তারা প্রতিনিয়ত এখান থেকে ব্যাট কিনে নিয়ে যান। এ ছাড়াও ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা এই কারখানা থেকে ব্যাট কিনে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন।

শ্যামল দাস জানান, তাদের এই কারখানা বড় করতে চান। তাদের কারখানায় তৈরিকৃত ব্যাটের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমরা অর্ডার অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারি না। তবে সরকার কিংবা যদি বেসরকারি পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে তাদের আর্থিক সহযোগিতা করলে তারা এই ক্রিকেট কারখানা বড় আকারে করতে পারতেন।

স্থানীয় সমাজসেবক হারুন অর রশিদ জানান, তাদের গ্রামে তৈরি ক্রিকেট ব্যাটের ব্যাপক চাহিদা। এখানে সম্পূর্ণ হাতে তৈরি করা হয় ব্যাট। ভালমানের কাঠ দিয়ে তৈরি করার কারণে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এই গ্রামে এসে কি ক্রিকেট ব্যাট কিনে নিয়ে যান। ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কারখানার মালিকরা জানান, তাদের কারখানা যদি বড় করতে পারেন তাহলে এখানে অনেকের কর্মসংস্থান হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button