কালীগঞ্জটপ লিড

কালীগঞ্জের ২০ গ্রামের মানুষের সমস্যাটি কী সমাধান যোগ্য নয়?

ঝিনাইদহের চোখঃ

আজো ২০ গ্রামের মানুষের প্রাণের দাবি একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা হয়নি। তারা দীর্ঘদিন তত¦িপুর বাজারে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার দাবি করে আসছে। এই তত্বিপুর এলাকার প্রায় ৭ শত যুবক বিদেশ থেকে নিয়মিত টাকা পাঠাচ্ছেন। রয়েছে ২১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যার শিক্ষকরা বেতন উঠান ব্যাংক থেকেই।

এলাকায় রয়েছে প্রায় ৫০ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত তত্তিপুর বাজার। যেখানে রয়েছে ৩ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আছে পুলিশ ফাঁড়ি, ইউনিয়ন পরিষদ, চালকল, রড-সিমেন্টের ডিলার, বেকারীর মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানও। অঞ্চলটি কৃষি প্রধান অঞ্চল হিসেবে ব্যপক পরিচিত। এতো কিছুর পরও একটি ব্যাংক না থাকায় কষ্টের শেষ নেই সেখানকার মানুষের।

স্থানিয়রা বলছেন, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বৃহত বাজারগুলোর মধ্যে তত্তিপুর একটি। এই বাজারে একটি ব্যাংক না থাকায় এলাকার ২০ গ্রামের মানুষের আর্থিক লেনদেন করতে হয় ৮ কিলোমিটার দূরের চাপরাইল বাজারের অগ্রনী ব্যাংকের মাখায়। আবার অনেকে যান ১৫ কিলোমিটার দূরের খাজুরা বাজারের ব্যাংকে। এতে কষ্টের পাশাপাশি মারাত্বক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়।

স্থানিয় মালিয়াট ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের বাসিন্দা নূর আলী জানান, ১৯৭৩ সালে তত্তিপুর বাজার প্রতিষ্ঠিত। মালিয়াট ইউনিয়নের সেই সময়ের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ইউনিয়ন পরিষদটি ঘিরে বাজার বসান। মাত্র ৪ থেকে ৫ টি টোং দোকান দিয়ে যাত্র শুরু হয় এই বাজারের। বর্তমানে এখানে স্থায়ি দোকান আছে ২ শতাধিক, আর সাপ্তাহিক বাজারের আরো দোকান বসে শতাধিক। বাজারে বেশ কিছু বড় বড় দোকান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাজারের সঙ্গেই রয়েছে একটি পুলিশ ফাঁড়ি। বাজারটি যে মালিয়াট ইউনিয়নের মধ্যে সেই ইউনিয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২১ টি। যার মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩ টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫ টি ও কলেজ আছে ৩টি। এছাড়া দুইটি ইটের ভাটা রয়েছে। মালিয়াট, তত্বিপুর, দিঘেরপাড়া, বারফা, পরানপুর, আন্দলপোতা, দলেননগর, কাষ্টসাগরা, সহ প্রায় ২০ টি গ্রামের মানুষ এই বাজারে কেনাবেচা করে। তিনি আরো জানান, গোটা মালিয়াট ইউনিয়ন কৃষি কাজের জন্য ব্যপক পরিচিত। এখানে সব ধরনের সবজির চাষ হয়। দূর থেকে ব্যাপারীরা আসেন মালামাল কিনতে। যারা ঝুঁকি নিয়ে টাকা বহন করে থাকেন।

ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম খাঁ জানান, তাদের এলাকার ২০ গ্রামের প্রায় ৭ শত যুবক থাকেন দেশের বাইরে। তারা অর্থ উপার্যনের জন্য বিদেশে গেছেন। এখন তারা নিয়মিত টাকা পাঠান। কিন্তু তাদের পরিবারের সদস্যদের এই টাকা সংগ্রহ করতে যেতে হয় চাপরাইল অথবা খাজুরা বাজারে। অনেক সময় দূরের বাজারে গিয়ে টাকা উঠিয়ে বাড়ি ফিরতে দূর্ঘটনায় পতিত হন। অনেকে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে তাদের টাকা খুইয়ে বাড়ি ফেরেন। তিনি বলেন এই বাজারে একটা ব্যাংক জরুরী। তিনি বলেন, ইতিপূর্বে বিষয়টি নিয়ে সংবাদপত্রে লেখালেখিও হয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

এই অবস্থায় তাদের এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন চেষ্টা করছেন তত্তিপুর বাজারে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের বাজারে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা হয়নি। আর একটি ব্যাংক না থাকায় তাদের ভোগান্তির শেষ নেই। স্থানিয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একরামুল হক জানান, তত্তিপুর বাজারে একটি ব্যাংক প্রতিষ্টা খুবই জরুরী। এলাকার ব্যাবসা বানিজ্যের প্রসার, সাধারণ মানুষের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য তারা একটি যেকোনো ব্যাংকের শাখা প্রতিষ্টার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আজো সফল হতে পারেননি। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা আশা করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রাণী সাহা জানান, এ বিষয়ে এলাকাবাসি তার দপ্তরে কোনো দাবি নিয়ে এখনও আসেনি, এলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button