জানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখামহেশপুর

ঝিনাইদহে কপোতাক্ষ নদ দখল করে কাটা হচ্ছে পুকুর

ঝিনাইদহের চোখঃ

কপোতাক্ষ নদ এর জায়গা দখল করে নদের মধ্যে পুকুর কাটছেন আব্দুল মতিন নামের স্থানিয় এক জনপ্রতিনিধি। গত এক সপ্তাহ তিনি ভেকু মেশিন দিয়ে এই পুকুর কাটার কাজ করছেন। ইতিমধ্যে সিংহভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসি। তারা বলছেন দখলদার আব্দুল মতিন স্থানিয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হওয়ায় তারা কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর এলাকার গোয়ালহুদা গ্রামের নিচে।
অবশ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে পুকুর কাটার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সীমানা নির্দ্ধারন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর দখলদার আব্দুল মতিন বলছেন, পুকুরটি পূর্বেই কাটা ছিল, তিনি ভেকু মেশিন দিয়ে ঝালাই করেছেন মাত্র।

প্রসঙ্গত, যশোর জেলার উপর দিয়ে যাওয়া কপোতাক্ষ নদটির কিছু অংশ ঝিনাইদহের মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে। নদটি মহেশপুর উপজেলার পুরন্দপুর এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খালিশপুর বাজার পার করে মহেশপুর শহরে প্রবেশ করেছে। মহেশপুর শহর পেরিয়ে বৈচিতলা হয়ে আবারো শহরের আরেক পাশ দিয়ে বয়ে আজমপুর হয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলায় প্রবেশ করেছে। সেখান থেকে চৌগাছা হয়ে যশোরের কেশবপুরে মিলেছে।

শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, কপোতাক্ষ নদের মহেশপুর অংশে বেশকিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। খালিশপুর বাজার থেকে মহেশপুর শহরের দিকে বয়ে যাওয়া নদের পূর্বপাশে বেশ কয়েকটি দোকান গড়ে উঠেছে। রয়েছে একটি মসজিদ ও নতুন করে নির্মান করা হচ্ছে শ্বশান ঘাট। এরই বিপরীতে পশ্চিমপাশে একাধিক পুকুর রয়েছে। পশ্চিমপাশের গ্রামটির নাম গোয়ালহুদা। এই গ্রামের একাধিক বাসিন্দা পুকুরগুলো কেটেছেন। নতুন করে গোয়ালহুদা গ্রামের বাসিন্দা ফতেপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর সরকার দলের প্রভাবশালী কর্মী আব্দুল মতিন একটি পুকুর কাটছেন। ইতিমধ্যে পুকুর কাটার বেশির ভাগ কাজ শেষ করে ফেলেছেন।

স্থানিয়রা বলছেন, জায়গাটি সম্পূর্ণ নদের। তিনি ইতিপূর্বে সেখানে ছোট একটি পুকুর কেটেছিলেন, এবার সেটা বড় করলেন। তিনি স্থানিয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী হওয়ায় তারা কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করে গোয়ালহুদা গ্রামের এক ব্যক্তি জানান, ভেকু মেশিন লাগিয়ে খুব দ্রæততার সঙ্গে এই পুকুর কাটার কাজ করা হয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি পুকুরের কাজ প্রায় সেরে ফেলেছেন। এ ব্যাপারে তারা গোপনে স্থানিয় ভুমি অফিসকে অবহিত করেছেন, কিন্তু তেমন পদক্ষেপ দেখতে পাননি। যে কারনে পুকুর কাটার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

বিষয়টি নিয়ে আব্দুল মতিন এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, জায়গাটি তার কেনা সম্পত্তি। এখঅনে পূর্বেই পুকুর ছিল, তিনি নতুন করে শুধু ঝালাই করেছেন আর পাড় বেঁধেছেন। তিনি বলেণ এই পাড় বাঁধঅর সময় সামান্য কিছু মাটি নদ এর মধ্যে পড়তে পারে, তাছাড়া তিনি নদের জায়দা দখল করেননি। তিনি বলেন, মহেশপুর ভুমি অফিসের কর্মকর্তারা তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি তাদের কাগজ দেখিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সুজন সরকার জানান, তিনি অন্য একটি প্রয়োজনে খালিশপুর এলাকায় যাবার সময় পুকুরটি কাটতে দেখেন। এরপর তিনি সেটি বন্ধ করেছেন। এখন সীমানা নির্দ্ধারন করে তারপর ব্যবস্থা নিবেন। নদ এর মধ্যে পুকুর হলে অবশ্যই সেটা উচ্ছেদ করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button