সাবেক সংসদ সদস্য এবাদৎ হোসেন মন্ডলের ইন্তেকাল
ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য এবাদৎ হোসেন মন্ডল ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহে—রাজিউন। বার্ধ্যজনিত কারণে রোববার রাত ৯টার দিকে তিনি ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে গেছেন। মরহুমের ভাতিজা রবিউল ইসলাম জানান, ৬ মাস ধরে এবাদৎ হোসেন অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন। বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী এবাদৎ হোসেন মন্ডল ১৯৩৯ সালে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের নাটোপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম হজী পাচু মন্ডল। অরাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হলেও এবাদৎ হোসেন ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তার কারিশমেটিক গুনের কারণে কোন সহায়তা ছাড়াই নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করেন। তিনি ছিলেন কেসি কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। তিনি ১৯৬৫ সালে চোর নিধন কমিটি গঠন করে জেলাব্যাপী আলোচনায় আসেন। ওই সময় ৭ জন চোরকে গুম করার অপরাধে পাকিস্থান সরকার তাকে আটক করে ঝিনাইদহে নিয়ে আসেন। এবাদৎ হোসেন মন্ডলের আটকের খবর বিদ্যূৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার জনতা থানা ঘেরাও করেন। এক পর্যায়ে জনগনের চাপে পাকিস্থান সরকার তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। ১৯৭০ সালে পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে পরাজিত হন তিনি। সাবেক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দল গঠন করলে এবাদৎ হোসেন সেই দলের মহাকুমা সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রয়ারী নির্বাচনে তিনি বিএনপি প্রার্থী হিসেবে ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি প্রায় ১২ বছর ধরে মহাকুমা ও পরবর্তীতে জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালের সেপ্টম্বর মাসে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়েন। সোবমবার দুপুরে ঝিনাইদহ উজির আলী স্কুল মাঠে জানাজা শেষে তার মৃত দেহ দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় কালীগঞ্জ উপজেলার নাটোপাড়া গ্রামে। সাবেক এমপি এবাদৎ হোসেনের নামাজে জানাজায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা যোগ দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য এবাদৎ হোসেন মন্ডলের মৃত্যুতে বিভিন্ন মহল থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে।