১৪৪ ধারা ভঙ্গ: মহেশপুরে তারানীবাস বিলে মাছ ধরার অভিযোগ
ঝিনাইদহের চোখ-
আদালত পর পর তিনটি ১৪৪ ধারা জারি করেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দূর্গাপুর তারানীবাস বিলের উপর। কিন্তু আদালতের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বেদমপুর গ্রামের প্রবীর হালদারের নেতৃত্বে দিনে ও রাতে মাছ ধরা হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, সরকারের কাছ থেকে কোটচাঁদপুরের মৎস্যজীবি সমিতি ৫৪ বিঘা জমির উপর দূর্গাপুর-তারানীবাস বিলটি ১৭ লাখ টাকা দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ডেকে নেন। কিন্তু বিলের ভিতর ব্যক্তি মালিকানা জমি রয়েছে প্রায় ১০০বিঘার উপরে। এর মধ্যে বৌচিতলা গ্রামের প্রেম হালদার ২২বিঘা, বেগমপুর গ্রামের ফয়জুর রহমানের ১১ বিঘা, মহিউদ্দীনের ১২ বিঘা, বদরুর মিয়ার ৫০ শতক জমি। মালিকানা জমিগুলো লিজ নিয়ে বৌচিতলা গ্রামের প্রেম কুমার হালদার দীর্ঘদিন মাছ চাষ করে আসছিলো।
বৌচিতলা গ্রামের প্রেম কুমার হালদার জানান, সরকারের কাছ থেকে এবার আমি বিলটি না পেয়ে আমি এলাকার কয়েক জনের কাছ থেকে মালিকানা জমি লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছিলাম। কিন্তু এখন বেগমপুর গ্রামের প্রবীর হালদার তার লোকজন নিয়ে আমাদের জলাসয় থেকে দিনে-রাতে জোরপূর্বক মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। যার কারনে আমি আদালতে গত ১৪/৭/২০২০ তারিখে আমার জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
তার পরও তারা আদালতের ১৪৪ ধারা ভঙ্গকরে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
বেগমপুর গ্রামের ফয়জুর রহমান জানান, বৌচিতলা গ্রামের প্রেম কুমার হালদার এবার ৫৪ বিঘা জমির উপর দূর্গাপুর-তারানীবাস বিলটির ডাকে হেরে যান। সে কারনে তিনি বিলের ভিতর ব্যক্তি মালিকানা প্রায় ৪৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করে। কিন্তু অতি বৃষ্টির কারণে পানি বেড়ে যাওয়ায় বিল আর মালিকানা জমি একাকার হয়ে গেছে।
এখন বিলের ডাক দাতা কোটচাঁদপুরের মৎস্যজীবি সমিতির ব্যনারা বেগমপুর গ্রামের প্রবীর হালদার তার লোকজন নিয়ে আমাদের জলাসয়ে জোর পুর্বক মাছ ধরে নিচ্ছে। যার কারনে আমি গত ২০/৭/২০২০ তারিখে আদালতের মাধ্যমে আমার জলাসয়ের উপর ১৪৪ ধারা জারি করেছি। কিন্তু তার পরও বেগমপুর গ্রামের প্রবীর হালদার তার লোকজন নিয়ে আদালতের জারিকরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে আমাদের জলাসয় থেকে জোর পূর্বক দিনে ও রাতে মাছ ধরে নিচ্ছেন।
বেগমপুর গ্রামের মহিউদ্দীন জানান, আমার জমির জলাশয় থেকে মাছ ধরার করনে আমি গত ৬/৮/২০২০ তারিয়ে আদালতে ১৪৪ ধারা জারি করেছি। কিন্তু তার পরও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আদালতের ১৪৪ ধারা ভঙ্গকরে বেগমপুর গ্রামের প্রবীর হালদার প্রকাশ্যে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের ভয়ে আমরা কিছুই বলতে পাচ্ছিনা।
মহেশপুরের মাছ ব্যবসায়ী আড়ৎদার শ্যামাপদ হালদার জানান, আমরা দীর্ঘ ১৫টি বছর সরকারের কাছ থেকে বিলটি ইজারা ও ব্যক্তি মালিকানা জমি গুলো লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছি। এখন যারা বিলটি ডাক নিয়েছে তারা নিজের জলাসয় বাদ দিয়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন জলাসয় থেকে মাছ ধরা শুরু করেছে। এটা আসলেই লজ¦ার বিষয়। তার পরও আদালতের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মাছ ধরছে।
বেগমপুর গ্রামের প্রবীর হালদার জানান, কোটচাঁদপুরের মৎস্যজীবী সমিতি ৫৪ বিঘা জমির উপর দূর্গাপুর-তারানীবাস বিলটি ১৭ লাখ টাকা দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ডেকে নেন। সেই সাথে বিলের মধ্যে থাকা প্রায় ১২ জনের নিকট থেকে ৮৫ বিঘা জমি আমি লিজ নিয়েছি। আমি আমার বিল ও নিজের নামে লিজ নেওয়া জলাসয় থেকে মাছ ধরেছি। আমি কারও জলাশয় থেকে মাছ ধরেনি। প্রবীর হালদার আরো জানান, আমার বিরোধীরা আমাদের নামে আদালতে একের পর এক মামলা দিয়ে যাচ্ছে আমাদের নামে।