ঝিনাইদহে মাত্র ৫দিনে এনজিও’র নাম ভাঙিয়ে কোটি টাকা নিয়ে উধাও প্রতারক চক্র
ঝিনাইদহের চোখ-
হঠাৎই বাড়ী ভাড়া নিয়ে নাম সর্বস্ব সাইনবোর্ড লাগিয়ে দরিদ্রমানুষের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে গায়েব হয়ে গেছে বেসরকারী একটি সংস্থা। মাত্র ৫দিনের ব্যবধানে শতশত হতদরিদ্র মানুষের টাকা নিয়ে উধাও হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দিশেহারা হতদরিদ্র পরিবারগুলো কোন কুলকিনারা না পেয়ে স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করেছে।
প্রতারিত জাহানারা খাতুন জানান, ঝিনাইদহের শৈলকুপা আবাইপুর গ্রামের সিটি কলেজ পাড়ার বাসিন্দা। স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করে। সিরাক বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারী এসজিও’র অফিসে বার বার দেখতে আসছেন। কারণ এ দরিদ্র মহিলা মেয়ের জন্য ১লাখ ৫০ হাজার টাকা লোনের আশায় ১৫২৫০ টাকা দিয়েছেন নাজমুল নামের এক প্রতারকের কাছে। এখন তিনি টাকা হারিয়ে হতবিহ্বল, বাকরুদ্ধ।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানায় নাজমুলকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হরলা গ্রামের রুহুল আমিন জানান, সিরাক বাংলাদেশ নামের এক বেসরকারী এনজিও’র নামে হয়েছে প্রতারনা। মাত্র ৫দিনে প্রায় কয়েকহাজার মানুষের কাছ থেকে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার নাম করে ৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে নাজমুলসহ ৩জনে। এত অল্পসময়ে কীভাবে এত মানুষকে নিঃস্ব করে উধাও হয়ে গেল প্রতারকচক্র তা রিতিমতো অবাককর। এলাকায় ফেলেছে চাঞ্চল্য।
প্রতিবেশী মহিউদ্দীন জানান, উপজেলার পৌরসভাধীন সিটিকলেজ রোডের গ্রীস প্রবাসী আকবর হোসেনের বাড়ীতে ভাড়া নেয় প্রতারকচক্র। গত মাসের ২৫ তারিখে বাসার গেটে তারা একটি সাইনবোর্ড লাগায় “সিরাক বাংলাদেশ” নামের। কোথায় কীভাবে তাদের কার্যক্রম চরছে কেউ জানে না। চলতি মাসের ১অক্টোবর থেকে তাদের ঋণ দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করার কথা ছিল। মাসে ৪হাজার টাকায় তারা এ বাড়ী ভাড়া নেয়। কথা ছিল ১বছরের অগ্রিসও দেবে।
প্রতারিত হয়ে অন্যন্য গ্রাহকরা জানান, তাঁরা সরল মনে ঋণের আশায় এই টাকা দিয়েছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা সংগ্রহ করেছে সংস্থাটির কর্মকর্তারা। তাঁরা অফিসের সাইনবোর্ড আর সাজানো-গোছানো অফিস দেখে টাকা দেন। গ্রাহকেরা ৫ হাজার থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত টাকা দিয়েছেন। তারা বিকাশের মাধ্যমে এই টাকা দিয়েছেন। এখন তাঁদের ব্যবহৃত মুঠোফোনগুলো বন্ধ।
সিরাক বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক এস এম সৈকত জানান, এ নিয়ে তারা মিরপুর পল্লবী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তাঁদের সংস্থার ঝিনাইদহের শৈলকুপা এলাকায় কোনো শাখা নেই, কখনো ছিল না। এ ছাড়া তাঁরা ঋণদান কর্মসূচি বাস্তবায়নও করেন না।
শৈলকূপা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ জানান, সিরাক বাংলাদেশ নামে কোনো সংস্থা তাঁদের দপ্তরের নিবন্ধিত নয়। শৈলকুপা শহরে অফিস করেছে, এটাও তাঁদের জানা নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন তিনি।