ভাই সেজে সর্বনাশ ঝিনাইদহে বিয়ের দাবিতে ৭ দিন ধরে অনশন
এম হাসান মুসা, ষ্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহের চোখ-
অভাবের সংসার তাই নুন আনতে পান্তা ফুরায় আর এই সুযোগে পাড়ার এক নব্য টাকাওয়ালা লম্পট যাতায়াত শুরু করলো পরিবারে। প্রথম দিকে তাকে আপন বোন ভেবে অভিনয় শুরু। প্রয়োজনীয় অনেক কিছু কিনে দিতেন মেয়েটিকে।
এভাবেই পরিবারের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে পাড়ার সেই লম্পট ছেলেটি। তখনও মেয়েটি ও তার পরিবার জানে না তাদের কি সর্বনাশ ঘটতে যাচ্ছে। আর এই ঘটনা ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামের। প্রেমিকের নাম আকাশ ওরফে আক্কাচ সে একই উপজেলার আলম খোন্দকারের ছেলে। আর প্রেমিকা একই গ্রামের দশম শ্রেণীর ছাত্রী নার্গীস(১৫)(ছদ্যনাম)। বর্তমান মেয়েটি ৭ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করলেও কারো কোন টনক নড়েনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,গত ২০ সেপ্টেম্বর আকাশ মেয়েটিকে বিয়ে ও অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ভাগিয়ে নিয়ে যান এবং বিয়ের নামে একটানা ১৫ দিন ঝিনাইদহ বন্ধুর বাসায় রেখে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে তাকে ছেড়ে পালিয়ে আসেন শেখপাড়াতে। গত ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় আকাশের গ্রামের বাড়িতে ওঠে মেয়েটি এবং বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেছে। আকাশের সংসারে তার স্ত্রী ও দুটি সন্তানও রয়েছে। আকাশ বর্তমানে পেশায় একজন সবজি ব্যবসায়ী। সে তার স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে উপজেলার শেখপাড়া বাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে।
অনশনকারী প্রেমিকা জানায়, বিভিন্ন সময় আকাশ আমাকে স্নেহ করার নামে শরীরে বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতো। কিন্তু পরিবারের সম্মান ও লাজলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেনি। এভাবেই বছরের পর বছর আকাশ আমার দুর্বলতার সুযোগে জেনে শুনে আমার দেহ ভোগ করেছে। আকাশ বিয়ে করা সহ নানা প্রলোভন দেখিয়েছে। এখন আমি কোথায় যাবো। বাবার বাড়িতে কোন জায়গা নেই বিধায় উপায়ন্তর না দেখে ওর বাড়িতে উঠেছি। আমাকে বিয়ে না করা পর্যন্ত আমি এ বাড়ি ছেড়ে যাবো না। তার বাড়ির লোকজন আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। জোড়পূর্বক বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পায়তারা করছে।
অনশনকারী ছাত্রীর বাবা বলেন,প্রায়ই রাতে আকাশ আমার বাড়ি আসতো এবং আমার মেয়েকে কাছে ডেকে গল্প করতো। আমি কখনো ভাবেনি যে আকাশ বোনের চোখে দেখে আর তার দ্বারা এত বড় মেয়ের সর্বনাশ হবে । আমার মেয়েকে ফুসলিয়ে ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে গিয়ে মেলামেশা করেছে আকাশ। আমার পরিবারের মানসম্মান শেষ করে দিয়েছে। এখন আমার মরণ ছাড়া উপায় নেই। নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়েও আমরা এখন চিন্তিত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, উপজেলার কাঁচেরকোল ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামের আকাশের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক হয় বিধায় গত ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় আকাশের গ্রামের বাড়িতে ওঠে এবং বিয়ের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছে মেয়েটি। আকাশের সাথে দীর্ঘদিন অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। পরিবারে সাথে আসা যাওয়া করতো আকাশ। কিন্তু চরিত্রহীন আকাশ মেয়েটির সরলতার সুযোগে এমন কাজ করবে তারা চিন্তাও করতে পারেনি। আকাশের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার।
তবে প্রেমিক আকাশ মুঠোফোনে বলেন, মেয়েটির সাথে আমার তেমন সম্পর্ক নেই ,আমার ফাঁসাতে এসব ষড়যন্ত্র চলছে।
কাঁচেরকোল ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. সালাউদ্দিন জোয়ার্দার মামুন বলেন, ‘ঘটনাটি আমি কিছুই জানিনা। লোক মারফত শুনেছি তবে এমন ঘটনা ঘটলে আকাশের শাস্তি হওয়া উচিত।
শৈলকূপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, ছাত্রীর অনশনের ঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ আমার কাছে আসেনি।লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।