ঝিনাইদহ শৈলকুপা-নাগিরহাট বাসিন্দাদের দুঃখ একটি মাত্র ভাঙ্গা কালভার্ট
ঝিনাইদহের চোখ-
চার কিলোমিটার পিচঢালা মশৃন সড়ক, তবুও মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। একটি ভাঙ্গা কালভার্টের কারনে ভ্যান-রিক্সা ছাড়া কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারে না মশৃন ওই সড়কটিতে। অতিরিক্ত ৪ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হয় শৈলকুপা-নাগিরহাট নামক সড়কটির দুই পাশের বাসিন্দাদের। তাদের দাবি এই অবস্থা দীর্ঘদিন চললেও সংষ্কারের উদোগ নেই।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা শহরের সঙ্গে নাগিরহাট এলাকার মানুষের যোগাযোগের প্রধান সড়ক নাগিরহাট-শৈলকুপা সড়ক। শহর থেকে নাগিরগাট বাজার এর দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। এই চার কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে গ্রাম রয়েছে ৯ টি। গ্রামগুলো হচ্ছে ফাদিলপুর, হিতামপুর, মনোহরপুর, বিজুলিয়া, দামুকদিয়া, লক্ষিপুর, মাধবপুর, বিষ্ণুদিয়া ও নাগিরহাট। এই চার কিলোমিটারের মধ্যে নাগিরহাট ও সীমান্তবাজার নামের দুইটি বাজার রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে উপজেলা শহরের বড় বাজারটি।
দামুকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, তাদের গ্রাম ছাড়াও বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ওই সড়কের পাশের গ্রামগুলোতে বসবাস করেন। যারা ব্যবসা-বাণিজ্য ও তাদের দৈনন্দিন কেনাকাটায় এই সড়কই ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে সড়কের মাঝের একটি কালভার্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় তারা চলাচল করতে পারছেন না। রিক্সা-ভ্যান আর বাইসাইকেল ছাড়া কিছুই চলতে পারে না সড়কটি দিয়ে। একটি প্রাইভেটকার বা পন্যবাহি কোনো ট্রাকও ভাঙ্গা কালভার্টের কারনে গ্রামে ঢুকতে পারে না।
আবু জাফর নামের আরেকজন জানান, শৈলকুপা-নাগিরহাট সড়কটি পিচঢালা সড়ক। তিন বছর হয়েছে সড়কটি এলজিইডি কর্তৃপক্ষ পাকা করেছেন। বর্তমানে খুবই সুন্দর সড়ক এটি। কিন্তু দামুকদিয়া মাঠের মধ্যের এই কালভার্টটি ভেঙ্গে পড়ে আছে প্রায় ১ বছর। আর এই ভাঙ্গা কালবার্টের কারনে হাজার হাজার মানুষ কষ্ট করছেন। তারা কোনো যানবাহন নিয়ে গ্রামে প্রবেশ করতে পারেন না। রাতে ভাঙ্গার কারনে চলাচল করতে ভয় পান।
এ বিষয়ে একাধিকবার এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, কিন্তু কালভার্টটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
মানিক মোল্লা নামের এক ভ্যান চালক জানান, তারা কষ্ট করে যেতে পারেন, তবে জীবনের ঝুকি থেকে যায়। একটু এলোমেলো হলেই নিচে পড়ার ভয় থাকে। তিনি জানান, ইতিপূর্বে রাতে এই ভাঙ্গা পেরুতে গিয়ে নিচে পড়ে আহতও হয়েছেন কয়েকজন।
শৈলকুপা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জানান, তার বাড়ি এই ইউনিয়নে। তিনি মাঝে মধ্যেই এই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। সুন্দর একটি সড়ক অচল করে রেখেছে একটি ছোট ভাঙ্গা কালভার্ট। আর এই ভাঙ্গার কারনে সড়কটির পাশের গ্রামগুলোতে কোনো যানবাহন ঢুকতে পারে না। বিপদের সময় পুলিশের বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যেতে হলে আরো অতিরিক্ত ৪ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়। বিজুলিয়া হয়ে পূর্ব দিকের একটি সড়ক ঘুরে নাগিরহাট বাজার হয়ে উল্টো গ্রামগুলোতে প্রবেশ করতে হয়।
তিনি আরো জানান, সড়কটির এই অবস্থার কারন তারা এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। তিনি দাবি করেন অত্রালাকার হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি কমাতে দ্রæত কালভার্টটি সংষ্কার প্রয়োজন।
এ বিষয়ে এলজিইডি’র শৈলকুপা উপজেলা দপ্তরের নকশাকার আলমগীর হোসেন জানান, ৮ টি কালভার্ট মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে দামুকদিয়া মাঠের মাঝের এই ভাঙ্গা কালভাটটিও রয়েছে। ইতিমধ্যে এগুলো উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ভেঙ্গে নতুন করে নির্মানের অনুমোদন দিয়েছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী রওশন হাবিব জানান, তারা আশা করছেন দ্রæতই এই ভাঙ্গা কালভার্টের কাজ শুরু করতে পারবেন