ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় অবাধে চলছে অরক্ষিতভাবে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। মান নির্ণয় ছাড়াই এসব গ্যাস সিলিন্ডার উপজেলা শহরসহ গ্রামের সাধারণ মানুষ রান্নার কাজসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই এ উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে ও ১টি পৌরসভার প্রায় সব হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানির ব্যবসা চালানো হচ্ছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে মুদি দোকান, ফার্নিচারের দোকান, ফটোকপির দোকান, ক্রোকারিজের দোকানসহ সাধারণ দোকানেও বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। কিন্তু দোকানগুলোতে কোনো অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র নেই। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থাও নেই। জনবহুল কিংবা আবাসিক এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্যবসার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। জেলা শহরের বিভিন্ন দোকান থেকে এসব গ্যাস সিলিন্ডার আনা হচ্ছে আর ইচ্ছামত কোন নিয়মনীতি না মেনে ১৩০০-১৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে।
আরও জানা গেছে, বর্তমান সময়ে শৈলকুপা উপজেলায় সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী যেখানে সেখানে সিলিন্ডার ফেলে রেখে ব্যবসা করছে। হাতে গোনা দু-একজন ব্যবসায়ী ছাড়া অন্য কারও নেই সুরক্ষা ব্যবস্থা। এসব ব্যবসায়ী সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। বাড়তি লাভের আশায় দোকানের বাইরে ফুটপাতে রোদে ফেলে রাখা হয়েছে এসব সিলিন্ডার। এ ছাড়াও ঝুঁকিপূর্ণ সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ, ওজনে কমসহ বাড়তি দাম নেওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেক গ্রাহক।
জ্বালানি অধিদপ্তরের আইন অনুযায়ী, যেসব প্রতিষ্ঠান এলপি গ্যাস বিক্রি করবে, তাদের বিক্রির স্থান সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রেখে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে হবে। গ্যাস বিক্রির স্থানে কমপক্ষে পাকা ফ্লোরসহ আধাপাকা ঘর, অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার, মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে। এ ছাড়া থাকতে হবে জ্বালানি অধিদফতরের অনুমোদন।
শৈলকুপা বাজারে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী মো. মামুন বলেন, অনেকদিন ধরে এ ব্যবসা করছি এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তাই একটু ঝুঁকি থাকলেও বাজারে চাহিদা থাকার কারণে ব্যবসা করে যাচ্ছি।
উপজেলার কবিরপুর গ্রামের বাসিন্দা জিহাদ হোসেন বলেন, যদিও যত্রতত্র পড়ে থাকা এসব গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা উচিৎ নয় তবুও প্রয়োজনের তাগিদে আমরা এসব গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করছি। যা থেকে যে কোন সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ মো. আক্কাস আলী বলেন, গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা করতে হলে ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিতে হয়, ফায়ার সার্ভিসের কাগজপত্র সংগ্রহ করে বিস্ফোরক দ্রব্য আইন মেনে ব্যবসা করতে পারে। আইন না মেনে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা করা ঠিক না কারণ যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়াও এই ব্যবসা করতে হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থাকা বাধ্যতামূলক।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা জানান, অলক্ষিতভাবে অবাধে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির বিষয়টি আমরা অবগত আছি। যেসব দোকান বৈধ সনদ ছাড়া অবৈধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস বিক্রি করছে সেগুলোকে খুব শীঘ্রই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।