টানা বৃষ্টিতে শৈলকুপায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
এম হাসান মুসা, ষ্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহের চোখ-
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে গত ৩ দিনের একটানা বৃষ্টিতে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। বিশেষ করে পেঁয়াজ চাষিদের মাথায় হাত। এ ছাড়াও ক্ষেতে কেটে রাখা পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে উঠতি ফসলসহ গমের। ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর শৈলকুপা উপজেলায় পেঁয়াজ ৭৮৯০ হেক্টর, রসুন ১৭৫৫ হেক্টর, গম ৩১৯০ হেক্টর, বোরোধান ১২২২৫ হেক্টর, মশুর ডাল ৩০৯০ হেক্টর, সরিষা ২৭৮৫ হেক্টর অন্যান্য ডাল ২৫০ হেক্টর, শীতকালিন সব্জি ৩৪১০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার অধিক চাষ করা শুরু হয়েছিল। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে কৃষকের সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ হতে চলেছে। ক্ষেতে কেটে রাখা পাকা ধান তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে ক্ষেতেই এ ধান হতে কল বেরিয়ে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এবার এ উপজেলায় আগের তুলনায় বেশী পেঁয়াজ চাষের লক্ষমাত্রা নিয়ে কৃষক অক্টোবর মাসের শেষদিকে আগাম জাতের পেঁয়াজের বীজ বীজতলায় ফেলতে শুরু করে। কিন্তু নভেম্বর মাসে ১২ তাং থেকে তিন দিনের অতি বৃষ্টির কারণে ক্ষেতেই এ বীজ বিনষ্ট হয়। নতুন উদ্যোমে আবারও বীজ তলায় পেঁয়াজ বীজ বপন করে। গত ৫ই ডিসেম্বরে আবারও তিন দিনে টানা বর্ষনে সে বীজগুলোও বিনষ্ঠ হয়ে গেল। পর পর দুই বার বৃষ্টির কারনে বীজতলাতেই কৃষকের স্বপ্ন তলিয়ে যায়। যার কারণে বেশীর ভাগ কৃষক এবারে পেঁয়াজ চাষ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
অনেকে বিকল্প ফসল চাষের কথা ভাবছেন। দেশের আভ্যন্তরিন পেঁয়াজের চাহিদার ২০% পেঁয়াজ এ উপজেলাতেই উৎপাদন করা হয় । পেঁয়াজ মৌসুমে এ এলাকা থেকে প্রতিদিন শতশত ট্রাক পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়। এবারের এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য কৃষকদের মাঝে দ্রæত সময়ের মধ্যে সার ও বীজ প্রদান করলে কিছুটা ক্ষতিপুরণ হবে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান , বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান ।
এলাকা ঘুরে, দেখাগেছে, উপজেলাসদর, হিতামপুর, হাজরামিনা, বিজুলিয়া, মনোহরপুর, পাইকপাড়া, দামুকদিয়া, হরিহরা, সাধুহাটি,ব কদিয়া, ধলহরাচন্দ্র, ধাওড়া, শিতালি, হাটফাজিলপুরসহ উপজেলার সকলগ্রামেই কমবেশী পেঁয়াজ সহ সকল রবীশষ্য চাষ করা হয়ে থাকে।
অসময়ে ২০ দিনের ব্যাবধানে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে এখন শৈলকুপা উপজেলা জুড়ে কৃষকের মাঝে শুধুই কান্না,কৃষকরা পথে বসার উপক্রম হয়েছে।অনেকে এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পেঁয়াজ চাষ শুরু করে। এখন যে অবস্থা, এই ঋণ পরিশোধ করার পথ খুঁজে পাচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালি বেগম বলেন, নিম্নচাপ জাওয়াদের প্রভাবে তিনদিনের বৃষ্টিতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের তালিকা তৈরি করতে বলেছি।