ঝিনাইদহে বৃষ্টি ধান চাষীদের আশীর্বাদ ।। দুশ্চিন্তায় এসএসসি পরীক্ষার্থীরা
বসির আহাম্মেদ, ঝিনাইদহের চোখ-
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ঝিনাইদহে চারদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে।রোপা আমন চাষীদের জন্য বয়ে এনেছে আশীর্বাদ।তবে দুশ্চিন্তায় আছে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে ভোগান্তি।শহরের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার।
চলতি বছরের এসএসসি পরিক্ষার্থী লামিয়া খাতুন জানান,গত চারদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় এখন দুশ্চিন্তায় আছি। পরিক্ষা শুরুর প্রথম দিনেও যদি টানা বৃষ্টি হয় তাহলে আমাদের পরিক্ষার হলে গিয়ে আসন খুঁজতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে। বৃহস্পতিবার পরীক্ষার প্রথম দিন হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছি আমরা। এরই ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবনের।
তবে অসময়ে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তবে সবজি চাষিদের কিছুটা ক্ষতি হলেও রোপা আমন চাষীদের জন্য বয়ে এনেছে আশীর্বাদ।তবে দুশ্চিন্তায় আছে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার সারাদেশে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে চলতি বছরের এসএসসি,দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষা।জেলার ৬ উপজেলার এলাকার মাঠ জুড়ে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন বৃষ্টিতে ভিজে স্বপ্ন যেন আবার আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিচ্ছে । রোববার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঝিনাইদহে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হলেও মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে শুরু হয় টানা বৃষ্টি ।যা চলতে থাকে সারা রাত। বুধবার এর ব্যতিক্রম হয়নি কখনো থামে আবার কখনো মুসলধারে চলে বৃষ্টি।তাই দুশ্চিন্তায় আছে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা।অপরদিকে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটেখাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ গুলো। কাজ না পেয়ে অনেকে বিভিন্ন দোকানে বসে থাকতে দেখা গেছে।
কথা হয় সদর উপজেলার বিষয়খালী গ্রামের আশরাফুল ইসলাম এছি বিশ্বাসের সাথে তিনি জানান,ভোরে গ্রাম থেকে শহরে আসছি রিক্সা চালাতে কিন্তু আসার পর কিছু টাকা ভাড়া মারছি কিন্তু হঠাৎ শুরু হয় টানা বৃষ্টি। তাই চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছি আর ভাবছি আজ যে টাকা ভাড়া মাড়বো তা মালিককে দিলে সমান্য টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হবে।এভাবে অবিরাম বৃষ্টি হলে আমি ভিজে রিক্সা চালাতে পারবো না।আর সারাদিন যা উপার্জন করতে পারবো তা দিয়ে বাজার সদায় করায় কষ্ট হয়ে যাবে। সেই সাথে বিপাকে পড়েছে অফিস গামী চাকুরী জিবি মানুষ।তবে অবিরাম বৃষ্টির কারণে বিদ্যালয়ের উদ্দেশে রাস্তায় বের হতেই পারেনি শিক্ষার্থীরা। টানা বৃষ্টির কারণে শহরের কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে,বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের এর প্রভাবে চলছে অবিরাম বৃষ্টি।এর প্রভাবেই সারাদেশের ন্যয় ঝিনাইদহে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি কমবে বলে আশা আবহাওয়া অফিসের। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের এর প্রভাব কেটে যাওয়ার সাথে সাথে সারাদেশের তাপমাত্রা কমতে বাড়তে করবে। অন্যদিকে,মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
বুধবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতি ২৪ ঘন্টায় সারাদেশের ৪১ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় যা ১২১ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়।পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘনীভূত হতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার আবহাওয়ার অবস্থা দুইদিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।তবে বর্ধিত তিনদিন পর আবহাওয়ার অবস্থা সামান্য পরিবর্তন হয়ে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে।