
ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কপোতাক্ষ নদ। ব্রিজের অভাবে দুই পাড়ের প্রায় দেড় হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী জনসাধারণ বাঁশের তৈরি সাঁকোর উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষার সময় শিশু শিক্ষার্থীরা চরম ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে।
জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলার জলিলপুর এবং ফতেপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বেড়ের মাঠ, নীমতলা, ফতেপরি, কদমতলা, জুগিহুদা,শড়াতলা গ্রামের প্রায় দেড় হাজার লোকজন বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যোগাযোগ করছেন।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা কষ্টে চলাচল করছেন। বর্ষা আসলেই শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের স্কুলে যাওয়া এক প্রকার বন্ধ করে দেন। বর্ষায় সাঁকো পার হতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী আহত হবার ঘটনাও ঘটেছে।
উপজেলার যুগিরহুদা গ্রামের প্রবীণ জনৈক হাফিজুর রহমান বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে এখানে নৌকায় পারাপার হত লোকজন। কিন্তু রাতে এবং শীতের সময় সমস্যাটা বেশি হত। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরপরই নৌকার মাঝিরা বাড়ি চলে যেত। ফলে কাজের প্রয়োজনে যারা দেরিতে ঘাটে আসতো, তারা নদী পার হবার জন্য চরম সমস্যায় পড়তে হত। এক দিন গ্রামের লোকজন এখানে বাঁশের সাঁকো তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর এখানে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নির্বাচন আসলে নেতারা আসেন, প্রতিশ্রুত দেন। নির্বাচন শেষ হলে আর দেখা মেলে না, এমনকি তাদের প্রতিশ্রুতিও মনে রাখেন না। এমন ভাবে প্রায় ৩০ বছর ধরে চলে আসছে। এখানে ব্রিজ হলে জনজীবন অনেকটাই পাল্টে যাবে বলে আশা করেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামবাসীর উদ্যোগে প্রায় ৩০ বছর আগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। যেখানে বাঁশের শত শত খুঁটি আড়াআড়ি গেড়ে দু’টি বাঁশের পাটাতন তৈরি করে প্রায় সাড়ে পাঁচ’শ ফুট লম্বা সাঁকো তৈরি করা হয়েছে।
এর আগে ঝুঁকি নিয়ে নৌকার পারাপার হত গ্রামবাসী। এখানে ব্রিজ তৈরি না হওয়ায় শিক্ষা, চিকিৎসা এবং কৃষি ক্ষেত্রসহ সার্বিক ক্ষেত্রে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, ২০১৭ সালে সাবেক সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ’র কাছে আবেদন করা হয়েছিল।
তিনি আশ্বাসও দিয়েছিলেন কিন্তু তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থী বাঁশের তৈরি সাঁকোর উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে মহেশপুর মহিলা কলেজ, সরকারি পাইলট বালক বিদ্যালয়, মহেশপুর মহিলা কলেজ, দলিলপুর ফাজিল মাদ্রাসা, দলিলপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দলিলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিদিন এই বাঁশের সাঁকো উপর দিয়ে চলাচল করে।