ক্যাম্পাস

ডাবল জিপিএ-৫ পাওয়া ঝিনাইদহের তানিয়াকে অর্থ সহযোগীতা

#টিপু সুলতান, ঝিনাইদহের চোখঃ

এস.এস.সি’র পর এবার এইচ.এস.সিতে জিপিএ-৫ পেয়েও উচ্চশিক্ষা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে ঝিনাইদহের তানিয়ার।

দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত অদম্য মেধাবী পিতৃহারা তানিয়া বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায় লেখাপড়া করছে। তার মা আছিয়া বেগম বাসা বাড়িতে কাজ করে যে টাকা উপার্জন করে তা দিয়েই চলে তাদের সংসার।

এ খবর স্থানীয় ও আঞ্চলিক পত্র পত্রিকাসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে শৈলকুপার বগুড়া ইউনিয়নের আমেরিকা প্রবাসী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) হৃদয়বান এক ব্যক্তির নজর কাড়ে। তিনি শৈলকুপা প্রেসক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকদের মাধ্যমে তানিয়ার ভবিষ্যত পড়ালেখার খরচ যোগাতে ইচ্ছে পোষন করেছেন।

ঝিনাইদহ কাঞ্চননগর স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এবার এইচ এস সি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উর্ত্তিণ হয়েছে। শুধু তাই নয় সে উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে এস এস সিতেও জিপিএ ৫ তুলেছে। উচ্চশিক্ষা নিয়ে ব্যাংকার হবার স্বপ্ন তানিয়া সুলতানার। কিন্তু এত ভাল ফলাফল করার পরেও অর্থাভাবে সে স্বপ্ন মিইয়ে যেতে শুরু করেছে। ফলাফলের দিন যে উচ্ছলতা ভর করেছিল তার চোখে মুখে, দিন কয়েক যেতেই সেখানে হাজির কঠিন বাস্তবতার হতাশা।

তানিয়ার বাবা নেই, মা আছিয়া বেগমের ভিটেমাটি পর্যন্ত নেই। কাঞ্চননগর এলাকায় পরের জমিতে একটি কুড়ে ঘর বেঁধে সেখানে বসবাস করছেন দির্ঘ দিন ধরে। মা আছিয়া বেগম এলাকার বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে কাজ করেন। মেধাবী এ ছাত্রী পড়া লেখার পাশাপাশি টিউশনি করেছেন। তাতেই উঠে এসেছে নিজের হাত খরচটা। কিন্তু দারিদ্রতার তীব্র কষাঘাতে জর্জরিত মেধাবী এই তরুণীর শিক্ষার সেই স্বপ্ন কি পূরণ হবে? এমনই সংশয় তার মনে তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় বাসীন্দা আব্দুল মজিদ জানায়, তানিয়া খুবই মেধাবী ছাত্রী। ছোট থেকেই সে খুব কষ্ট করে পড়ালেখা করেছে। তার প্রতিটি পরীক্ষার ফলাফল অনেক ভালো। আমরাও যতটুকু পারি তাকে সাহায্য করি। কিন্তু সামনে উচ্চশিক্ষার ব্যয়ভার এই টাকা তানিয়ার মা আছিয়ার পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। তাই এলাকাবাসীও চায় বিত্তবান লোকেরা যেন তানিয়ার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।

মা আছিয়া বেগম তার মেয়ের ভবিষ্যৎ ভাবনায় ছলছল চোখে বলেন, আমার মেয়ে এস এস সি তে ভালো ফলাফল করেছে। তা দেখে কাঞ্চননগর স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকরা ফ্রি ভর্তি করিয়ে নেয় তানিয়াকে। বাসা বাড়িতে কাজ করে মায়ের উপার্যন এবং তানিয়ার টিউশনির টাকা দিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব না। মা আছিয়া বেগম সরকারের কাছে আকুল আবেদন করেন যাতে সরকারি ভাবে তানিয়ার পড়া লেখার খরচ বহন করা হয়।

শনিবার দুপুরে শৈলকুপা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে তানিয়া ও তার মা আছিয়া বেগম প্রাথমিক পর্যায়ে ২০ হাজার টাকা নগদ অর্থ গ্রহণ করেছেন। এসময় জেলা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিক ও শৈলকুপা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেলোয়ার কবীর, শৈলকুপা প্রেসক্লাবের সভাপতি মাসুদুজ্জামান লিটন, সাধারণ সম্পাদক শিহাব মল্লিক, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান সুমন, দপ্তর সম্পাদক এইচ এম ইমরান, নির্বাহী সদস্য তাজনুর রহমান ডাবলু, রাজীব মাহমুদ টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তানিয়ার মা আছিয়া বেগম তার মেয়ের লেখাপড়ায় উৎসাহিত করতে সাংবাদিকদের এ সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি আমেরিকা প্রবাসী অর্থদাতার জন্য দোয়া করেছেন। অদূর ভবিষ্যতে তানিয়ার সর্ব্বোচ ডিগ্রি পড়ালেখার খরচ জোগাতে জনৈক প্রবাসী আশ্বাস দিয়েছেন।

এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, তানিয়া সুলতানা আমার প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই প্রতিষ্ঠান থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় করেছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button