তৌকীর আহমেদ পড়েছেন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে
ঝিনাইদহের চোখঃ
ছোটবেলায় পড়েছেন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে। তারপর সেখান থেকে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্থাপত্যে স্নাতক অর্জন। এমন ঝলমলে সুন্দর শিক্ষাজীবন। খুব সহজেই হতে পারতেন বড় কোনো কর্মকর্তা কিংবা অন্য কিছু।
কিন্তু না, তিনি বেছে নিলেন অভিনয়, বেছে নিলেন নির্মাণ। নিজের ওপর বিশ্বাস ছিল। আর তাই নিজের পছন্দের পথে এসেই সাফল্যের গল্প রচনা করেছেন। অভিনেতা হিসেবে যেমন জয় করেছেন কোটি দর্শকের মন, তেমনি নির্মাতা হয়ে তৈরি করেছেন ব্যতিক্রম পথ।
বলছি তৌকীর আহমেদের কথা। গুণী অভিনেতা ও নির্মাতা। বলা হয়, এই সময়ে তিনিই দেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন নির্মাতা। যার সিনেমায় থাকে শিল্পকলা এবং বাণিজ্য উভয়ের সংমিশ্রণ। থাকে সমাজের কথা, থাকে মানুষের কথা, মানবতার কথা।
আজ ৫ মার্চ তৌকীর আহমেদের জন্মদিন। বিশেষ এই দিনে তিনি সহকর্মী ও প্রিয়জনকের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন। ভালোবাসা জানাচ্ছেন ভক্তরাও।
তৌকীর আহমেদ যখন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের ছাত্র, তখনই তিনি জড়িয়ে পড়েন মঞ্চ নাটকের সঙ্গে। তবে নাটকে তার অভিষেক হয় আশির দশকে। বিটিভির একটি বিশেষ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তৌকীর। এরপর ১৯৯৬ সালে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত ‘নদীর নাম মধুমতী’ সিনেমায় অভিনয় করে নিজের প্রতিভার জানান দেন তিনি।
একই বছর তৌকীর তার শ্বশুর আবুল হায়াতের নির্দেশনায় ‘হারজিত’-এ অভিনয় করেন। বিপরীতে ছিলেন বিপাশা হায়াত। যিনি তৌকীরের স্ত্রী। এই নাটকটি দারুণভাবে সমাদৃত হয়। এর ফলে আরও অনেকগুলো নাটকে জুটি বেঁধে কাজ করেন তৌকীর ও বিপাশা। সেই সময় তারা জুটি হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান।
নাটকের পাশাপাশি তৌকীর আহমেদ সিনেমাতেও নিয়মিত কাজ করতে থাকেন। তার কেরিয়ারে যোগ হতে থাকে ‘চিত্রা নদীর পারে’, ‘লালসালু’, ‘রূপকথার গল্প’, ‘প্রিয়তমেষু’, ‘ফিরে এসো বেহুলা’, ‘একই বৃত্তে’, জালালের গল্প’ ও ‘প্রার্থনা’ নামের সিনেমাগুলো।
অভিনয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে তৌকীর আহমেদ পরিচালক হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘জয়যাত্রা’। এটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। সিনেমাটির জন্য শ্রেষ্ঠ প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তৌকীর।
এরপর একে একে তৌকীর আহমেদ নির্মাণ করেন ‘রূপকথার গল্প’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘হালদা’ ও ‘ফাগুন হাওয়ায়’। প্রতিটি সিনেমাই দর্শক ও সমালোচক মহলে দারুণ প্রশংসিত হয়। সেই সঙ্গে তৌকীরের হাতেও উঠে আসে দেশ-বিদেশের বহু পুরস্কার ও সম্মাননা।
ব্যক্তিগত জীবনে অভিনেত্রী বিপাশা হায়াতের স্বামী তৌকীর আহমেদ। ১৯৯৯ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন তারা। তাদের সংসারে আছে এক কন্যা আরিশা আহমেদ ও এক ছেলে আরীব আহমেদ।