শ্রেষ্ঠ ইবাদাত দোয়া; কিভাবে দোয়া করবেন!
পৃথিবীর সকল মানুষ আল্লাহর নিকট মুখাপেক্ষী। এমন কোনো বিষয় নেই যা আমরা নিজে থেকে সম্পন্ন করতে পারি। আমাদের যাপিত জীবনে যা কিছু করি তার সবই হচ্ছে আল্লাহর নিকট মুখাপেক্ষীতার অংশ। আল্লাহ আমাদের যে বিষয়গুলো মিটিয়ে দেন বা দান করেন তা হচ্ছে একান্ত রহমত ও মেহেরবানী। বান্দাহ যখনই আল্লাহ তাআলার কাছে কোনো কিছু চায়; আল্লাহ তখন তার অন্তরের আকুতি কি মনোভাব কি তা বুঝেন এবং দেখেন। আল্লাহর কাছে এই মুখাপেক্ষীতা, কোনো কিছু চাওয়া এবং কামনা করার নামই হচ্ছে দোয়া।
কী ভাবে দোয়া করব?
সর্বগুনের মাঝে সেরা গুণ; সব সৌন্দয্যের মাঝে সেরা সৌন্দর্য বলে কথা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হায়াতে জিন্দেগীতে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম গুণই হলো আল্লাহর নিকট দোয়া করা। তিনি সারা জীবন আল্লাহর দরবারে এত দোয়া করেছেন যা দুনিয়াতে আর কেউ করেনি। এ যেন বহু চাঁদের মাঝে একটি পূর্ণিমার চাঁদ! রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই দোয়ায় আকর্ষণ ছিল প্রচণ্ড হৃদয়ের উত্তাপও বিনয়কাতরতার; ছিল প্রচণ্ড আবেদন, নিবেদন ও মুখাপেক্ষিতার; ছিল কান্না!, অশ্রæ প্লাবিত কান্নার; যা তিনি নিজে করেছেন এবং উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন। অন্যান্য বিষয়ের মতো তিনি দোয়ার ক্ষেত্রেও যে ছিলেন মুআল্লিম।
তাইতো হাদিছের কিতাবে অগণিত অসংখ্য দোয়া বর্ণিত আছে। সে গুলো পূর্ণ ভক্তি ও মুহাব্বাত ও নিবিড় ভালোবাসার সাথে আল্লাহর কাছে তুলে ধরে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন। দিল দিয়ে, মন দিয়ে, প্রাণ দিয়ে, জান দিয়ে আপনার প্রতিপালকের দরবারে দোয়া করুন।
আল্লাহর কাছে চাইবেন কাঙ্গাল ও ভিখারী হয়ে এবং এ বিশ্বাস থাকবে যে, আল্লাহ আমার দোয়া, আমার মোনাজাত, আমার চাওয়া, আমার ফরিয়াদ অবশ্যই কবুল করবেন। কবে, কীভাবে, কখন তা জানিন না; শুধু এটুকু জানি আল্লাহ আমার দোয়া ও মোনাজাত অবশ্যই কবুল করবেন। কারণ দোয়া যদি দিল থেকে মন থেকে না হয় তাহলে আল্লাহর দরবারে এই দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ থাকে।
কিছু হৃদয়গ্রাহী দোয়া-
-হে আল্লাহ আমাকে বানিয়ে দিন এমন, যেন আপনাকে (সর্বাপেক্ষা অধিক) ভয় করি, সর্বক্ষণ আপনাকে দেখার মত, যতক্ষণ না আপনার দীদার লাভ হয়। হে আল্লাহ, আমাকে খোশনছীব করুন আপনার তাকওয়া (ভয়) দ্বারা, আমি যেন বদনছীব না হই আপনার নাফরমানির দ্বারা।
আবার বলেছেন-
হে আল্লাহ আমার দিলের কানগুলো খুলে দিন আপনার যিকির (শ্রবন ও অনুধাবন)-এর জন্য। আর আমাকে দান করুন আপনার আনুগত্য এবং আপনার রাসুলের আনুগত্য এবং আপনার কিতাবের উপর আমল।
আরেকটি দোয়া-
হে আল্লাহ আপনার কাছে চাই স্থায়ী ঈমান এবং অনুগত হৃদয়, সত্য ঈমান, সরল দ্বীন এবং আপনার কাছে চাই রোগ-শোক থেকে নিরাপত্তা এবং আপনার কাছে চাই স্থায়ী নিরাপত্তা এবং আপনার কাছে চাই নিরাপত্তার উপর শোকর করার যোগ্যতা এবং আপনার কাছে মানুষের প্রতি নির্মুখাপেক্ষিতা। আল্লাহ আপনার সহায়তা ছাড়া আমাদের কোনো শক্তি নাই।
আমাদের উপলব্দি :
আমাদের প্রত্যেকটা কাজে আল্লাহর উপস্থিতির উপলব্দি থাকে তবে আমাদের দ্বারা কোনো অন্যায় কাজই হবে। তখনই স্বার্থক হবে আমাদের সকল প্রকার দোয়া এবং রোনাজারি। আল্লাহর কাছে যেন আমরা সব সময় এই রোনাজারির আশা করতে পারি।
রোনাজারিটি এই-
আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আ’ফুওউন; তুহিব্বুল আফ্ওয়া; ফা’ফু আন্নি; ইয়া গাফুরু
অর্থাৎ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল; আপনি ক্ষমাকে ভালবাসেন; সুতরাং আমাদেরকে ক্ষমা করুন হে ক্ষমাকরী।
সুতরাং আমরা আল্লাহর দরবারে সব-সময় দোয়া কবর। আল্লাহ আমাদের দোয়া করার; চাওয়ার; মিনতি করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
জাগো নিউজ ২৪ ডটকমের সঙ্গে থাকুন। রমজান সম্পর্কিত সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদীস মোতাবেক আমলী জিন্দেগী যাপন করে রমজানের রহমত, বরকত ও মাগফেরাত অর্জন করুন। আমীন, ছুম্মা আমীন