মুন্সিগঞ্জ; ইতিহাস-ঐতিহ্যে ভরা জেলা

ঝিনাইদহের চোখঃ
বহু কীর্তিমান মনীষীর স্মৃতিধন্য স্থান মুন্সিগঞ্জ জেলা। ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরা এ জেলার প্রাচীন নিদর্শন সমূহের সাথে জড়িয়ে রয়েছে প্রচুর গৌরব গাঁথা। সাহিত্য-সংস্কৃতির সকল শাখায় সমৃদ্ধ এই মুন্সিগঞ্জ জেলা। আমাদের দেশের জাতীয় অর্থনীতির গতি সচল রাখতে এ জেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মুন্সিগঞ্জ জেলার সব অঞ্চলের মধ্য দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়েছে। এই জেলা নদীবাহিত সমতল এলাকা। এই জেলার প্রায় সব এলাকা নিম্নভূমি হওয়ায় বর্ষার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়ে। মুন্সিগঞ্জ জেলার জলবায়ু সমভাবাপন্ন। এখানে বৃক্ষাদির সংখ্যা বেশি হওয়ার ফলে এই এলাকার আবহাওয়া বসবাসের জন্য অনেক আরামদায়ক।
মুন্সিগঞ্জের জেলার প্রাচীন নাম ছিল ইদ্রাকপুর। কথিত আছে, মোঘল আমলে এই ইদ্রাকপুর গ্রামে মুন্সী হায়দার হোসেন নামে একজন ব্যক্তি ছিল যিনি মোঘল শাসকদের দ্বারা ফৌজদার নিযুক্ত হয়েছিলেন। এই ব্যক্তি ছিল অত্যন্ত সজ্জন ও জনহিতৈষী। এই মুন্সী হায়দার হোসেনের নামেই ইদ্রাকপুরের নাম হয় মুন্সীগঞ্জ। তবে কারো কারো মতে জমিদার এনায়েত আলী মুন্সীর নাম অনুসারেই মুন্সিগঞ্জ জেলার নামকরণ করা হয়েছে।
প্রাচীনকালে এই অঞ্চল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দশ থেকে শুরু করে তের শতক পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এই অঞ্চল সেন, চন্দ্র ও বর্মণ রাজাদের রাজধানী ছিল। পরবর্তীতে একাত্তরের যুদ্ধেও এই জেলার যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। বর্তমানে মুন্সিগঞ্জ জেলা খুব এগিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে। বিগত কয়েক বছরে এখানে অনেক শিল্পের প্রসার ঘটেছে।
এ জেলায় বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো হল- জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্মস্থান, রাজা শ্রীনাথের বাড়ি, হাসারার দরগা, পদ্মার চর, রাজা বল্লাল সেন ও হরিশচন্দ্রের দীঘি, শুলপুরের গির্জা, অতীশ দীপঙ্করের জন্মস্থান, রামপালে বাবা আদমের মসজিদ, সোনারং জোড়া মন্দির, ইদ্রাকপুর কেল্লা, শ্যামসিদ্ধির মঠ, মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট প্রভৃতি।
এছাড়াও মুন্সীগঞ্জে রয়েছে মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজার বছরের পুরনো বৌদ্ধ বিহার। বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ ও ঐতিহাসিক নিদর্শন উদ্ধারে চালানো খনন কাজের মাধ্যমে এ বৌদ্ধ বিহার আবিষ্কৃত হয়। এই বৌদ্ধ বিহার আবিষ্কারের ফলে বিক্রমপুর অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্য সারা বিশ্বে আরো একধাপ এগিয়ে গেল বলে বলে মনে করা হয়েছে।
যেভাবে যাবেন:
গুলিস্তান থেকে বাসে করে যেতে পারেন মুন্সিগঞ্জ। বাস আপনাকে নামিয়ে দেবে মুন্সিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে অটো ঠিক করে ঘুরে দেখতে পারবেন জেলার দর্শনীয় জায়গা। আপনি চাইলে অটো চালকই আপনার গাইড হবে।