ক্যাম্পাস

নিজস্ব পরিবহন সংকটে ইবি, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহর থেকে ২৪ ও ২২ কিলোমিটার দূরে শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরে এটি অবস্থিত। সম্পূর্ণ আবাসন সুবিধা নিয়ে ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

পূর্ণাঙ্গ আবাসন সুবিধা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহরে থাকতে হয়। তারা ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহনে। তবে এ বিপুলসংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে পরিবহন সেবা দেওয়ার মতো নিজস্ব গাড়ি নেই বিশ্ববিদ্যালয়টির। নিজস্ব গাড়ি সংকটের কারণে ভাড়া গাড়ি দিয়ে এ চাহিদা মেটাতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহন করার জন্য বাস আছে মোট ৫১টি। এর মধ্যে নিজস্ব বাস মাত্র ১৬টি। এ ১৬টির মধ্যে আবার সচল রয়েছে মাত্র ১১টি। এছাড়া লিজ নিয়ে চলে ৩টি ডাবল টেকার। ভাড়ায় চালিত ৩২ টি বাসের মধ্য ১৬ টি কুষ্টিয়া সড়কে, ১৪টি ঝিনাইদহ ও ৪টি শৈলকুপা সড়কে চলাচল করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস না থাকায় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ বাস মালিক সমিতির কাছে জিম্মি হয়ে আছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। যে কোন পরিবহন ইস্যুতে বন্ধ থাকে ভাড়ায় চলিত গাড়িগুলো। সম্প্রতি ৪৮ ঘন্টা পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ২ দিন প্রায় অচল ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম। ক্যাম্পাসের নিজস্ব বাসগুলোও চলতে দেয়নি পরিবহন শ্রমিকরা।

পরিবহন শ্রমিকদের কারণে এই দুইদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৯টি পরীক্ষা স্থগিত করেছে কতৃপক্ষ। এতে পুনরায় বিভাগগুলো শেসনজট হওয়ার আশংকা করছে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থী শাফায়েত হোসেন বলেন, ‘পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আমাদের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সামনে ভর্তি পরীক্ষা ও প্রশাসনিক ছুটি থাকায় পরীক্ষাটি দীর্ঘদিন পরে হবে। এভাবে ধর্মঘট চলতে থাকলে আমরা আবারও শেসন জটে পড়বো।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে বিশ্ববিদ্যালয় আগামী তিন বছরের জন্য চুক্তি বদ্ধ হয়েছে ঝিনাইদহ জেলার সময় এন্টারপ্রাইজ ও কুষ্টিয়ার আজগার আলী পরিবহনের সাথে। আগামী ২০২১ সারের জুলাই মাসে এ চুক্তি শেষ হবে। তাদের সরবরাহকৃত গাড়িতে চলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন বাড়ালে মালিক সমিতির কাছে জিম্মি থাকবে না বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবছর শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন পুলে গাড়ি দরকার বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, ‘সম্প্রতি পরিবহন পুলে শিক্ষকদের জন্য ৪ টি বাস যোগ হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য কোন বাস কেনা হয়নি। এই সময় শিক্ষার্থীদের জন্য নিজস্ববাস থাকলে পরিবহন ধর্মঘটেও আমরা ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে পারতাম।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম শাহিনুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিবহন সংকট আছে তা বর্তমান প্রশাসনের আমলে অনেক খানি নিরসন হয়েছে। সামনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন ব্যবস্থা যাতে আরও বেশি স্বনির্ভর হয় সে জন্য নিজস্ব গাড়ি ক্রয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button