ঝিনাইদহের নেকবর শেখের করুণ কাহিনী
সাহিদুল এনাম পল্লব, ঝিনাইদহের চোখঃ
ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উন্নয়ন এবং দরিদ্র বিমোচন প্রকল্পে অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফ, ভিক্ষুক মুক্ত কর্মসূচী ও জমি আছে ঘর নেই নামের বিভিন্ন কর্মসূচী চালু আছে। এই কর্মসূচীর একটি প্রকল্প জোটেনি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার ১১ নং আবাইপুর ইউনিয়নের কৃপালপুর গ্রামের মৃত কিতাব উদ্দিন শেখের ছেলে নেকবর শেখ( ৭৬) ও তার স্ত্রী আলেয়া খাতুন ( ৬৮) নামক এই বৃদ্ধ দম্পতির জীবনে। এমন কি সরকারের ১০ টাকা কেজি মূল্যের চাউল ক্রয় করে খাওয়ার সুযোগ পায়নি তারা। এই ইউনিয়নের কয়েকজন শিল্পপতির বসবাস তাদের কারো নজরে আসেনি অসহায় দুঃস্থ বয়বৃদ্ধ পরিবারটি।
তাছাড়া সরকারের দারিদ্র প্রকল্প বাস্তবায়নকারি ব্যক্তি অথবা সংস্থার কেউ তদের খোজ রাখেনি। সারা জীবন কেটেছে দরিদ্রতার মাঝ দিয়ে এক সময়ে খেজুর গাছ কেটে গুড় রস বিক্রয় করে জিবিকা নির্বাহ করত। তাই তাকে সারা গ্রামের মানুষ নেকবর গাছি নামেই চেনে। এই দম্পতির ৪ মেয়ে ১ ছেলে। মেয়ে ৪ টির বিয়ে হয়ে গেছে। তাদের আর্থিক অবস্থা ভাল না। ছেলেটি ঢাকায় একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টারিতে কাজ করে। তা দিয়ে সে ঠিক মত চলতে পারে না। বয়সের ভারে দুই চোখেই ছানি পড়ে গেছে নেকবর শেখের এখন তেমন চোখে দেখতে পায় না তাই আর তার কাজ করার উপায় নেই।যদি তার ছানি অপরেশন করা যায় তাহলে সে আবার দেখতে পাবে। যার কারনে এখন গ্রামের উপর ভিক্ষা করা তার একমাত্র অবলম্বন। কোন প্রকারের গ্রামের মানুষের নিকট থেকে ভিক্ষা করে সে তার স্ত্রীর জীবন চলে। খাওয়া কোন রকমে চললেও ঘরে বসবাস করা খুবই মুশকিল। টাকার অভাবে জীর্ণ ঘরে বৃষ্টির পানি পড়ে শীতকালে পাটকাঠির বেড়ার ফাক দিয়ে আসে কনকনে ঠাণ্ডা। এই ভাবেই কোন রকমে বেঁচে আছে নেকবর শেখ। ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ অনুযায়ী নেকবর শেখের বয়স ৭৬ বছর হলের তার প্রকৃত বয়স ৮২ বছর হয়েছে বলে নেকবর শেখ জানায়।
জীর্ণকুঠিরে বসবাস রত নেকবর শেখ জানায় যে চেয়ারম্যান মেম্বরের নিকট অনেক বার গিয়েছি বয়স্ক ভাতার জন্য কেউ তেমন গুরুত্ব দেয় না। আবার শুনেছি সরকার দরিদ্র মানুষের জন্য ঘর করে দিচ্ছে কিন্ত আমাকে দিল না। শত অভাবের মাঝে আমার বসত ভিটায় ৯ শতক জমি আমি বিক্রয় করি নাই ।
হয়ত একদিন এমন দিন আসবে আমি আর চলতে পারব না সেদিন ঘরের মধ্যে আমাদের দুই জনের না খেয়ে মরে পড়ে থাকতে হবে। শুনেছি শেখের কন্যা খুব দয়ালু যদি আমাদের এই অবস্থা জানতে পারে তাহলে আমাদের জন্য কোন একটি ব্যবস্থা করে দেবে আমার বিশ্বাস।
নেকবর শেখের ব্যপারে ১১ নং আবাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হেলাল বিশ্বাসের সাথে কথা বললে সে জানায় যে আমি নেকবর শেখ কে তো তেমন চিনি না।