শৈলকুপা

বিমান ছিনতাইকারীর সাথে ঝিনাইদহের শিমলার কী সম্পর্ক?

ঝিনাইদহের চোখঃ

সেই অস্ত্রধারী-
বিমান ছিনতাইকারী মাহাদী সোনারগাঁওয়ের পলাশ –
ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ ছিনতাইকারী কথিত মাহাদীর পরিচয় মিলেছে। তার নাম মাহমুদ পলাশ (২৪)।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের পি আর জাহানের ছেলে পলাশ।

জানা গেছে, ২০১১ সালের দিকে স্থানীয় তাহিরপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে। এরপর সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেও পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি।

পলাশের বাবা ১৯৯০ সাল থেকে বিদেশে থাকতেন। প্রথমে কুয়েত এবং পরে সৌদি আরবে ছিলেন তিনি। প্রবাসী বাবার দেওয়া টাকা-পয়সা নিয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতেন পলাশ। এর মধ্যে নাচগান থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র শিল্পে জড়ান তিনি। কয়েকটি শর্টফিল্মও তৈরি করেন বলে জানায় পরিবার।

একটা সময় বাসা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন পলাশ। বাড়িতে তেমন যেতেন না। মাঝে মধ্যে টাকার প্রয়োজন হলে বাড়ি যেতেন।

পলাশের বাবা গত সাত বছর আগে বিদেশ থেকে স্থায়ীভাবে দেশে চলে আসেন। এলাকায় একটি মুদি দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।

পলাশরা চার ভাইবোন। তারা তিন বোন এবং এক ভাই। মা রেনু আক্তার গৃহিণী।

পলাশের বাবা বলেন, গত ২০-২৫ দিন আগে বাড়িতে আসে পলাশ। সাধারণত বাড়িতে সে এত দিন থাকতো না। গত ২০-২৫ দিনে অনেকটা পাল্টে যায় সে। মসজিদে যাওয়া-আসা করে, এমনকি আজানও দিয়েছে।

তিনি জানান, গত শুক্রবার বাসা থেকে বিদায় নেওয়ার সময় তার মাকে বলে যায়- ভ্রমণ ভিসায় আমি দুবাই যাচ্ছি।

তবে দুবাই যাওয়ার বিষয়ে বাবাকে কিছু বলেননি পলাশ।

তার বাবা বলেন, ছেলের উচ্ছৃঙ্খল জীবন নিয়ে তিনি এতটাই অতিষ্ঠ ছিলেন যে, তিনি চেয়েছেন- হয় ছেলে ভালো হোক, না হয় মারা যাক।

রোববার রাতে সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ পলাশের বাসায় এসে একটি ছবি দেখিয়ে তার বাবাকে বলেন- এটা আপনার ছেলে কিনা।

এসআই আবুল কালাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, “পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে একটি তথ্য আসে যে মেহেদী বা মাহাদী হাসান নামের বা এ ধরনের কেউ দুবাই যাবে এমন কেউ সোনারগাঁওয়ে আছে কিনা। পাশাপাশি মৃতদেহের একটি ছবি পাঠানো হয়েছিল। ওই ছবি নিয়ে তিনি রাতে পলাশদের বাড়িতে গেলে তার পরিবার পরিচয় নিশ্চিত করে।”

পরে ছবি দেখে এবং দুবাই যাওয়ার বিষয়টি মিলিয়ে পরিবার নিশ্চিত হয় নিহত ব্যক্তি মাহমুদ পলাশ।

প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ রোববার ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল। প্রায় দুই ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি ছিনতাই চেষ্টার অবসান হয়।

কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন। টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল।

এর আগে উড়োজাহাজটি থেকে যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় বিমানবন্দর এলাকায় ভিড় করে অসংখ্য মানুষ। এ ঘটনায় সাতটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করা হয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাত ১০টার দিকে বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button