কালীগঞ্জজানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখা

ঝিনাইদহে ড্রাগন চাষে ডনের চমক লাগানো পদ্ধতি ।। জেলায় পড়েছে হৈচৈ

ঝিনাইদহের চোখ-
বিশেষ এক পদ্ধতি “আল্ট্রা হাইডেনসিটি” ড্রাগন চাষ করে রিতিমতো হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন পুরো জেলায়। অভিনব এ পদ্ধতিতে চাষে তার সাফল্য দেখে জেলা জুড়ে পড়েছে ব্যাপক সাড়া । ইউরোপিয়ান ফল ড্রাগন, এ পদ্ধতিতে চাষ করে ঝিনাইদহে প্রথমবারেই সাফল্য পেয়েছেন এ উদ্যক্তা । জেলার বাইরে থেকেও ফল চাষীরা আসছেন চাষ পদ্ধতি শিখতে । সনাতন পদ্ধতিতে ৫০ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করলেও এবারই তিনি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের মাগুরা পাড়ায় প্রায় অর্ধ বিঘা জমিতে এই চাষ পদ্ধতিতে চাষ করেছেন।

৪০ বছর বয়সের ডন জানান, পড়াশুনা শেষ করার পর অনেক কিছুই করেছি। চকরি, ঠিকাদারিসহ নানা পেশার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি কিন্তু সাফল্যের মুখ দেখা হয়নি তার । সবক্ষেত্রেই পিছয়ে পড়েছি । শেষ পর্যন্ত গত ১৫ বছর ধরে তিনি এ পেশায় আছেন । কিন্তু মুল সাফল্যের মুখ দেখেছেন গত ৫ বছর হলো । এখন তিনি স্বাবলম্বী । বর্তমানে দিন হাজিরায় তার এ বিশাল প্রজেক্টে কাজ করেন ১০ জন শ্রমিক ।
তিনি জানান, সনাতন পদ্ধতি গত ৫ বছর চাষ করলেও এবারই প্রথম “আল্ট্রা হাইডেনসিটি” পদ্ধতিতে ড্রাগনের চাষ করেছেন । পেয়েছেন অবিশ্বাস্য সাফল্য । অল্প জায়গায় অধিক ফলন পেতে এ চাষ পদ্ধতির কোন বিকল্প নেই । ড্রাগন চাষিরা যেখানে এক বিঘায় ৮০০ টি চারা রোপণ করেন, সেখানে এই বাগানে ২৬০০ চারা লাগানো হয়েছে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ বেশি। ফলে ফলনও এসেছে তিনগুণ বেশি।

তিনি আরো বলেন, বাগানটিতে লম্বা সারি করে খুঁটি স্থাপন করে তার উপর দিয়ে লম্বা করে রড ও সিমেন্টের তৈরী আড়া স্থাপন করা হয়েছে। নিচে ৬ ফুট প্রশস্ত বেডের মাঝখানে স্থাপিত খুঁটির দুই পাশ দিয়ে সারি করে ড্রাগন গাছ রোপণ করা হয়েছে। প্রতিটি গাছ শিকড় বিস্তারের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখা হয়েছে। এক বিঘায় প্রথমে ৩ লাখ খরচ হলেও লাভ হয় প্রায় ১০ লাখ টাকা ।

সিলেট মৌলভীবাজার থেকে আগত ড্রাগন চাষী ও ফল ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, ব্যতিক্রম কিছু করে সাফল্য পেলে তো হৈচৈ পড়বেই । ইউরোপিয়ান ফল ড্রাগন চাষ করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন পুরো দেশে।
অভিনব এক পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ হচ্ছে শুনে দেখতে চলে এসেছি সিলেট থেকে । ওখানে যেন এ পদ্ধতি ছড়িয়ে দিতে পারি তাই হাতে কলমে শিখতে আসা । সত্যিই ব্যতিক্রমী ও অভিনব পদ্ধতি এটি ।

এলাকাবাসী রফিকুল ইসলাম জানান, এ ব্যতিক্রমী পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য উপযোগী। আমাদের চাষযোগ্য জমি কমে যাচ্ছে । সেখানে অল্প জায়গায় বেশি উৎপাদনের সাথে মুনাফাও ৩গুণ । এক কথায় দুর্দন্ত উদ্ভাবনী ।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিডি আজগর আলী বলেণ, দেশে ২০০৭ সালে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হলেও ২০১৪ সাল থেকে ঝিনাইদহে চাষ শুরু হয়। দেশের জন্য দারুন এক পদ্ধতি এটি । এটির সাফল্য যদি ছড়িয়ে যায় দেশ খুব উপকৃত হবে । প্রথমে একটু ব্যয় হলেও পরে লাভও হয় ৩গুন ভাবে ।

ঝিনাইদহ ব্যাপারী পাড়ার আজিজুর রহমান সালামের বড় ছেলে আহসানুল ইসলাম ডন ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button